ঢাকা,রোববার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

ব্লগার মরলে তোলপাড় ইমাম-মুয়াজ্জিন মরলে কেউ কথা বলে না -এরশাদ

9148_d10অনলাইন ডেস্ক :::

বাংলাদেশকে অসাম্প্রদায়িক বানানোর চেষ্টা সুখকর হবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তিনি বলেন, অসাম্প্রদায়িকতার অর্থ কি? এর অর্থ এখানে কোনো সম্প্রদায় থাকবে না। সম্প্রদায় থাকতে হবে। সম্প্রদায়ে সম্প্রদায়ে মিল থাকতে হবে। ব্লগাররা রাসূল (সাঃ) ও ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বলাতেই খুন হচ্ছেন বলেও মন্তব্য করেন এরশাদ। গতকাল রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ইউনাইটেড ইসলামিক পার্টির দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠারবার্ষিকীর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ ও খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। এরশাদ বলেন, ব্লগাররা খুন হচ্ছে। আমি কোনো হত্যা সমর্থন করি না। কিন্তু ব্লগাররা আমার রাসূলের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। তারা কেন আমার ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বলবেন? ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বললে আমাদের অনূভূতিতে আঘাত লাগে না? তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, কারও ধর্ম নিয়ে কটাক্ষ করা যাবে না। কিন্তু যেসব ব্লগার খুন হয়েছে, তারা কি ইসলামের বিরুদ্ধে কটাক্ষ করেনি? জাপা চেয়ারম্যান আরও বলেন, এক ব্লগার খুন হয়েছেন। এটা নিয়ে দেশ-বিদেশে তোলপাড় চলছে। বিবিসি-সিএনএন নিউজ করছে। আর কি আমার দেশে মানুষ মরে না? আমাদের মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন, মাদ্‌রাসার ছাত্র প্রতিনিয়ত খুন-গুম হলেও এ নিয়ে কারো মাথাব্যথা নেই। কারণ তারা মুসলমান, মানুষ না। তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে অনৈক্য। তাই আমাদের পরিণতি এমন হচ্ছে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এরশাদ আরও বলেন, আমরা মুসলমান। আর মুসলমান মানেই জঙ্গি! আমরা কেন জঙ্গি? সারা বিশ্বে যে হামলা হচ্ছে সেগুলো কি জঙ্গিবাদ নয়? সিরিয়া কেন ধ্বংস করা হচ্ছে? আফগানিস্তানে শিশুসহ হাজার হাজার নিরীহ মানুষ হত্যা করলেন, এটা কি জঙ্গিবাদ নয়? তেলের কারণে ইরাককে ধ্বংস করে দিলেন। সাদ্দামকে হত্যা করলেন। কী দোষ ছিল সাদ্দামের? লিবিয়াকে ধ্বংস করলেন। গাদ্দাফিকে হত্যা করলেন। সিরিয়ার মানুষ জীবন বাঁচাতে আশ্রয় চেয়েছিল, আশ্রয় দেননি। এটা মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়? ফিলিস্তিন রাষ্ট্রভূমিকে ইহুদিদের কাছে দেয়া হলো, সেখানেও হাজার হাজার নারী-শিশুকে হত্যা করা হলো, এটা কি জঙ্গিবাদ নয়? মুসলমানরা এর প্রতিবাদ-প্রতিরোধ করলেই এটাকে জঙ্গিবাদ বলে প্রচার করা হয়।
বহির্বিশ্বের হস্তক্ষেপের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমাদের দেশে না কি মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে? আপনাদের দেশে কি মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে না? আমাদের দেশ আমরা চালাব। আপনাদের কথা না শুনলেই আমরা জঙ্গি?
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, ইসলামের নামে যে জঙ্গি তৎপরতা চলছে, তার বিরুদ্ধে প্রতি জুমায় বক্তব্য দেয়া ইমামদের নৈতিক দায়িত্ব। যারা ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বলে, ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলে তাদের ছাড় দেয়া হবে না। জঙ্গি তৎপরতা ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে আমাদের সোচ্চার হতে হবে। তিনি আরও বলে, দুই দুইবারের প্রধানমন্ত্রী, যিনি জঙ্গিদের সঙ্গে আঁতাত করছেন, তার বিরুদ্ধেও সোচ্চার হতে হবে। যাদের দেশপ্রেম নেই, যারা জঙ্গি তৎপরতা চালায়, তারা সাচ্চা মুসলমান হতে পারে না।
হাছান মাহমুদ বলেন, যারা ধর্মের নামে মানুষের রগ কাটে। গুপ্ত হত্যা চালায়। তারা ইয়াজিদের অনুসারী। সারা পৃথিবীতে ইয়াজিদের অনুসারীরা মানুষের বিরুদ্ধে কাজ করছে। তিনি বলেন, নির্বাচন যখনই আসে, তখনই অনেকে কড়া মুসলমান হয়ে যায়। রাজনৈতিক যুক্তি-তর্কে যখন পারে না, তখন তারা ইসলামের দোহাই দেয়।

পাঠকের মতামত: